কলকাতা: বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে ৭ উইকেটে হারাল ভারত (Ind vs Ban)। বিরাট কোহলির নতুন রেকর্ড। খেলার দুনিয়ার সারাদিন।
ভারতের জয়
ওয়ান ডে বিশ্বকাপের ম্যাচে পুণের গাহুঞ্জেতে মহারাষ্ট্র ক্রিকেট সংস্থার স্টেডিয়ামে বাংলাদেশকে উড়িয়ে এশিয়া কাপে পরাজয়ের মধুর প্রতিশোধও নিল টিম ইন্ডিয়া। প্রথমে ব্যাট করে বাংলাদেশ তুলেছিল ২৫৬/৮। হাফসেঞ্চুরি করেছিলেন দুই বাংলাদেশি ওপেনার তানজিদ হাসান ও লিটন দাস। ওপেনিং জুটিতে ১৪.৪ ওভারে ৯৩ রান তুলে ফেলে বাংলাদেশ। যা ১৯৯৯ সালের ওয়ান ডে বিশ্বকাপে (ODI World Cup) পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মেহরাব হোসেন ও শাহরিয়ার হোসেনের ৬৯ রানের ওপেনিং জুটির রেকর্ডকে ছাপিয়ে যায়। তারপরেও ভারতীয় বোলিংয়ের সামনে খুব বড় কোনও চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে পারেনি বাংলাদেশ। যশপ্রীত বুমরা, মহম্মদ সিরাজ়, রবীন্দ্র জাডেজা, কুলদীপ যাদবদের সামনে ২৫৬-তেই আটকে যায় তাদের ইনিংস। তাও মাহমুদুল্লাহ ৪৬ ও মুশফিকুর রহিম ৩৮ রান করেন বলে ভদ্রস্থ স্কোর তোলে বাংলাদেশ।
রান তাড়া করতে নেমে রোহিত শর্মা অবশ্য ব্যাটিং শুরুই করেন থার্ড গিয়ারে। ৪০ বলে ৪৮ রান করেন তিনি। ডেঙ্গি থেকে সুস্থ হয়ে ফিরে ৫৩ রান শুভমন গিলের। তারপর থেকে শুধুই কোহলি। ৬টি চার ও ৪ ছক্কায় সাজানো তাঁর ইনিংস। একাধিক রেকর্ডও গড়েন কোহলি। মোট আন্তর্জাতিক রানের নিরিখে তিনি পেরিয়ে গেলেন মাহেলা জয়বর্ধনেকে (২৫,৯৫৭ রান)। কোহলির সামনে এখন শুধু রিকি পন্টিং (২৭,৪৮৩ রান), কুমার সঙ্গকারা (২৮,০১৬ রান) ও সচিন তেন্ডুলকর (৩৪,৩৫৭ রান)।
অবিশ্বাস্য ক্যাচ রাহুলের
একটা সময় উইকেটের পিছনে দাঁড়িয়ে একের পর এক অবিশ্বাস্য ক্যাচ নিতেন ঋদ্ধিমান সাহা (Wriddhiman Saha)। তাঁর নামই হয়ে গিয়েছিল সুপারম্যান ঋদ্ধিম্যান।
বৃহস্পতিবার পুণেতে যেন ঋদ্ধিমান সাহাকে মনে পড়ালেন কে এল রাহুল (KL Rahul)। একটা সময় যিনি কর্নাটকের কিংবদন্তি রাহুল দ্রাবিড়ের মতোই শুধু ব্যাটিংই করতেন। সৌরভের টিম ইন্ডিয়ায় ওয়ান ডে ফর্ম্যাটে জায়গা পাকা করার জন্য উইকেটকিপিং শুরু করেন। তারপর দ্রাবিড় হয়ে ওঠেন জাতীয় দলের উইকেটকিপার-ব্যাটার।
কে এল রাহুলও কর্নাটকের হয়ে শুধু ব্যাটিংই করতেন। কখনও সখনও কিপিং করেছেন। তবে ভারতের ওয়ান ডে দলে নিজের জায়গা পাকা করেছেন উইকেটকিপার-ব্যাটার হিসাবে। ঋষভ পন্থের গাড়ি দুর্ঘটনা জাতীয় ওয়ান ডে দলে তাঁর জায়গা আরও পোক্ত করে। সেই রাহুল পুণেতে বাংলাদেশ ম্যাচে এমন একটা ক্যাচ ধরলেন, যার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। বলা হতে থাকে, রাহুল কি মানুষ? নাকি উড়োজাহাজ?
ঘটনাটি বাংলাদেশ ইনিংসের ২৫তম ওভারের। মহম্মদ সিরাজ়ের ওভারের প্রথম বলটি লেগস্টাম্প লাইনে ছিল। ফ্লিক করতে গিয়েছিলেন মেহেদি হাসান মিরাজ়। বল তাঁর ব্যাটে লেগে লেগ স্লিপের দিকে উড়ে যাচ্ছিল। অনেকে ধরেই নিয়েছিলেন যে, বল বাউন্ডারি লাইনে আছড়ে পড়বে। কিন্তু অন্যরকম কিছু ভেবেছিলেন রাহুল।
অবিশ্বাস্য ক্ষিপ্রতায় শরীর বাঁদিকে শূন্যে ভাসিয়ে বল তালুবন্দি করেন তিনি। তারপরই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল সেই ক্যাচের ভিডিও। অনেকেই লেখেন, এবার রাহুলও সুপারম্যান। কেউ কেউ লেখেন, বাজপাখির মতো ক্ষিপ্রতা দেখিয়েছেন রাহুল। বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মারা এতটাই মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে যান যে, রাহুলকে জড়িয়ে ধরে সেলিব্রেশন শুরু করেন।
হার্দিকের চোট
মাঠ থেকে তাঁকে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে বেরতে দেখেই প্রমাদ গুনেছিলেন ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীরা (ODI World Cup 2023)। পুণের গাহুঞ্জেতে মহারাষ্ট্র ক্রিকেট সংস্থার স্টেডিয়ামের মাঠ থেকে বেরিয়েই ছুটলেন স্ক্যান করাতে। আর সেই রিপোর্টের জন্য শুধু যে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট হা পিত্যেশ করে অপেক্ষা করবে তা নয়, তাকিয়ে থাকবেন ক্রিকেটপ্রেমীরাও।
তিনি, হার্দিক পাণ্ড্য (Hardik Pandya)। তারকা অলরাউন্ডার দুরন্ত ছন্দে আছেন। ব্য়াট করার সুযোগ পেলে রান করছেন। বল হাতে উইকেট তুলছেন। সবচেয়ে বড় কথা, ধারাবাহিকভাবে ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার গতিতে বল করছেন।
বৃহস্পতিবার পুণেতে মহারাষ্ট্র ক্রিকেট সংস্থার স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের দুই ওপেনার যখন জাঁকিয়ে বসেছিলেন, তাঁর হাতেই বল তুলে দিলেন রোহিত শর্মা। বাংলাদেশ ইনিংসের নবম ওভারে। তাঁর দ্বিতীয় ও তৃতীয় বলে পরপর দুটি বাউন্ডারি মারলেন লিটন দাস। যার মধ্যে দ্বিতীয় চারটি স্ট্রেট ড্রাইভে। আর ফলো থ্রু-তে সেই শট পা দিয়ে আটকাতে গিয়েছিলেন হার্দিক।
তারপরই দেখা গেল পায়ে হাত দিয়ে কাতরাচ্ছেন হার্দিক। দেখে মনে হল, গোড়ালি মচকেছে হার্দিকের। ফিজিওকে ছুটে মাঠে আসতে হল। মোটা করে টেপ জড়ানো হল পায়ের চোট লাগা অংশে। কিন্তু লাভ হল না। খোঁড়াতে খোঁড়াতে মাঠ ছাড়লেন হার্দিক। তাঁর ওভারের বাকি তিনটি বল করলেন বিরাট কোহলি। ওয়ান ডে কেরিয়ারে ৪টি উইকেট রয়েছে কিংগ কোহলির। তবে এদিন ওই তিন বলে আর কোনও উইকেট পাননি।
বাংলার জয়
প্রথম ম্যাচেই মহারাষ্ট্রের কাছে পরাজয়। বিরাট ধাক্কা খেয়েছিল বাংলা (Bengal Cricket Team)। রুতুরাজ গায়কোয়াড়-কেদার যাদবদের ব্যাটিং দাপটের সামনে কার্যত একপেশেভাবে ম্যাচ হেরেছিল বাংলা।
তবে সৈয়দ মুস্তাক আলি টি-টোয়েন্টি (SMAT 2023) টুর্নামেন্টে ঘুরে দাঁড়াল বাংলা। পরপর ২ ম্যাচ জিতে কিছুটা ভাল জায়গায় লক্ষ্মীরতন শুক্লর প্রশিক্ষণাধীন দল। বৃহস্পতিবার পুদুচেরিকে ৬২ রানে হারাল বাংলা। আর সেই ম্যাচে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিলেন সুদীপ কুমার ঘরামি। এই মরশুমে যাঁকে অধিনায়ক করে সৈয়দ মুস্তাক আলি টি-টোয়েন্টিতে নেমেছে বাংলা।
ব্যাট হাতে জ্বলে উঠলেন সুদীপ। তিন নম্বরে নেমে ৩৭ বলে ৬৮ রান করলেন নৈহাটির ক্রিকেটার। ৪টি চার ও ৪টি ছক্কায় সাজানো তাঁর ইনিংস। তার আগে ইনিংস ওপেন করতে নেমে বিধ্বংসী ইনিংস খেললেন অভিষেক পোড়েলও। যিনি দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে গত আইপিএলে খেলেছেন। বৃহস্পতিবার পুদুচেরির বোলারদের কাছে আতঙ্ক হয়ে উঠলেন। ৫২ বলে ৭৩ রান করে অপরাজিত ছিলেন তিনি। ১০টি চার ও একটি বিশাল ছক্কা মেরেছেন চন্দননগরের উইকেটকিপার-ব্যাটার।
Read More