নয়াদিল্লি: কয়েক ফুট নয়, কয়েক মিটারও নয়। অগ্ন্যুৎপাত থেকে নির্গত ধুলো, ছাই সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৩ কিলোমিটার উচ্চতা পার করল। ১৬০০ কিলোমিটার দীর্ঘ ধোঁয়ার স্রোত নদীর আকার ধারণ করল নিমেষে। ইউরেশিয়ার সর্বোচ্চ অগ্ন্যুৎপাত বলে চিহ্নিত করা হচ্ছে এই ঘটনাকে, যা আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা NASA-র স্য়াটেলাইটে বসানো ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। সেই ছবিও প্রকাশ করেছে NASA, যা দেখে সাড়া পড়ে গিয়েছে সর্বত্র। (Klyuchevskoy Volcano)
রাশিয়ার কামচাটকায় অবস্থিত ক্লুশেফস্কয় সোপকা একটি সক্রিয় এবং মিশ্র আগ্নেগিরি। কমপক্ষে ৩০০টি জ্বালামুখ রয়েছে এই আগ্নেয়গিরিতে। ক্লুশেফস্কয়ের সোপকার উচ্চতা ৪ হাজার ৭৫০ মিটার। এশিয়া এবং ইউরোপের সর্বোচ্চ আগ্নেয়গিরি এই ক্লুশেফস্কয় সোপকা। কামচাটকা ভলক্য়ানিক ইরাপশন রেসপন্স টিম অন্তত তেমনই দাবি করে। (NASA Satellite Image)
চলতি বছরের শরতে নতুন করে সক্রিয় হয়ে উঠেছে ক্লুশেফস্কয় সোপকা। গত ১ নভেম্বর তার দিকে ক্যামেরা তাক করে NASA-র Aqua স্যাটেলাইট। তাতেই তার ভয়াবহ রূপ সামনে আসে। ক্লুশেফস্কয় সোপকা থেকে ছাই, ধুলো এবং ধোঁয়ার কুণ্ডলী ১৩ কিলোমিটার উচ্চতায় উঠে আসে। Aqua-র ক্য়ামেরায় তোলা ছবিতে ধোঁয়ার কুণ্ডলীর নীচে, রক্তিমবর্ণ গলিত লাভআর স্রোতও বইতে দেখা গিয়েছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, জুন মাসের মাঝামাঝি সময় থেকেই অগ্ন্যুৎপাত ঘটছিল। কিন্তু ১ নভেম্বর তর্জন গর্জন বেড়ে যায় ক্লুশেফস্কয় সোপকার। ১২ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত আগ্নেয়গিরি থেকে নির্গত ছাই, পাথর ছিটকে পড়তে থাকে। ক্লুশেফস্কয় সোপকার এই রূপ দেখে, ওই অঞ্চলের আকাশপথ দিয়ে বিমান চলাচলের উপর বিধিনিষেধ চাপে। বাতাসের দূষণ একধাক্কায় বেড়ে যাওয়ায়, আশেপাশের এলাকায় স্কুল বন্ধ রাখা হয়। নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয়দের।
নভেম্বরের শুরুতে কিছুদিনই ক্লুশেফস্কয় সোপকা এই ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। এই মুহূর্তে আগ্নেয়গিরি অনেকটাই স্তিমিত বলে জানা গিয়েছে। রাশিয়ার কামচাটকা উপদ্বীপ অঞ্চলটি ৪০ হাজা১র ২০০ কিলোমিটার দীর্ঘ প্রশান্ত মহাসাগরীয় অগ্নিবলয়ের মধ্যে পড়ে, যেখানে মাটির নীচে টেকটোনিক পাতগুলি সচল রয়েছে। ওই অঞ্চলেই পৃথিবীর মোট সক্রিয় আগ্নেয়গিরিগুলির তিন চতুর্থাংশের অবস্থান। ৩০ অক্টোবর থেকে ওই অঞ্চলে একাধিক অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা সামনে এসেছে। জাপানের ইয়োজিমা দ্বীপের অদূরে, মহাসাগরের নীচের আগ্নেয়গিরি থেকেও অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা ঘটেছে, যা থেকে নতুন একটি দ্বীপই গজিয়ে উঠেছে, মহাকাশ থেকেও ওই দ্বীপটি দৃশ্যমান।
এর আগে, ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে টঙ্গায় সমুদ্রের নীচের আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্ন্যুৎপাত ঘটলে, লাভা, ধোঁয়া সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৫৭ কিলোমিটার উপরে উঠে আটকে যায়। তার জেরে বায়ুমণ্ডলের ওজোন স্তর ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে জানান বিজ্ঞানীরা। তবে ক্লুশেফস্কয় সোপকা থএকে এমনটা হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
ওয়াশিংটন : আমেরিকার ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা। পরের বছর দেশে অনুষ্ঠিত হতে চলা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়তে পারবেন না প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Former President Donald Trump)। মঙ্গলবার ট্রাম্পকে ভোটে লড়ার অযোগ্য বলে ঘোষণা করে কলোরাডো সুপ্রিম কোর্ট। ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি আমেরিকার ক্যাপিটলে তাঁর সমর্থকদের হামলায় ট্রাম্পের ভূমিকার জেরে এই সিদ্ধান্ত। আর আদালতের এই ঘোষণার সাথে সাথে ট্রাম্পই আমেরিকার ইতিহাসে প্রথম প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী যাকে হোয়াইট হাউসে প্রবেশে অযোগ্য বলে ঘোষণা করা হল। আমেরিকা সংবিধানের খুবই কম ব্যবহৃত এক বিধানে বলা হয়েছে, যেসব অফিসিয়াল ‘বিদ্রোহের’ সঙ্গে জড়িত তাঁদের পদে থাকা যাবে না।
বেজিং : চিনে ভয়াবহ ভূমিকম্প । অন্ততপক্ষে ১১১ জনের মৃত্যু। শুরু হয়েছে উদ্ধারকাজ। CCTV সূত্রের খবর, তীব্র কম্পনে চিনের গানসু প্রদেশে প্রায় ১০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। জখম ২০-র বেশি। অন্যদিকে, কিংঘাইয়ের প্রতিবেশী প্রদেশ হাইডংয়ে আরও ১১ জনের মৃত্য়ু হয়েছে। সেখানে জখমের সংখ্যা ১০০। US Geological Survey-র তথ্য অনুযায়ীস কম্পনের মাত্রা ছিল ৫.৯।
ভূমিকম্পের জেরে তীব্র ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ভেঙে পড়েছে বহু বাড়ি। নিরাপত্তার খোঁজে মানুষ এদিক ওদিক ছোটাছুটি শুরু করে দেন। নিউজ এজেন্সি Xinhua সূত্রের খবর। মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত চলে উদ্ধারকাজ। ভূমিকম্পের পর জীবিতদের উদ্ধারকাজ এবং তাঁদের সম্পত্তি রক্ষায় সর্বাত্মক চেষ্টার নির্দেশ দেন প্রেসিডেন্ট শি জিপিং। সঙ্গে ত্রাণ পরিষেবাও।
আগেও ভূমিকম্প-
গত বছর সেপ্টেম্বর মাসেও তীব্র ভূমিকম্পে লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছিল চিনের বিস্তীর্ণ এলাকা। স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা বেজে ৫২ মিনিট নাগাদ কেঁপে ওঠে চিন (China Earthquake)। রিখটার স্কেলে কম্পনের তীব্রতা ছিল ৬.৮। তাতে কমপক্ষে ৬৫ জনের মৃত্য হয়। চিনের ‘গ্লোবাল টাইমস’ সংবাদপত্র জানায়, এক ঘণ্টার মধ্যে সাত সাত বার কেঁপে ওঠে সিচুয়ান প্রদেশ (Sichuan Province)। তীব্র কম্পনের ফলে পার্বত্য এলাকায় জায়গায় জায়গায় ধস নামে। বিস্তীর্ণ এলাকার সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় গোটা দেশের।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ভূমিকম্পের উৎসস্থল ছিল সিচুয়ান প্রদেশে, ভূগর্ভের ১০ কিলোমিটার গভীরে। চিন সরকার জানায়, সিচুয়ান প্রদেশের চেংদু শহরের ২২৬ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমের লুদিং পার্বত্য এলাকায় ভূমিকম্পের উৎপত্তি। তাতে ইয়াং এলাকায় ১৯ জনের মৃত্যু হয়। গাংচিতে মারা যান ২৯ জন।
চেংদুতে একাধিক বাড়ি ভেঙে যায়। তার সংলগ্ন চোংকিং মেগাসিটিতেও ক্ষয়ক্ষতি হয় বিপুল। ধস নেমে বন্ধ হয়ে যায় রাস্তাঘাট। টেলিফোন থেকে ইন্টারনেট সংযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় সেখানের সঙ্গে। ওই এলাকায় প্রায় ১০ হাজার মানুষের বাস। সেখানে বিদ্যুৎ পরিষেবাও বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উদ্ধারকার্যের নির্দেশ দেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।
২০২১ সালের মে মাসেও আচমকা ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে চিনের ইউনান প্রদেশ। রিখটার স্কেলে কম্পনের তীব্রতা ছিল ৬.১। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূতত্ত্ববিদরা জানান, ভূমিকম্পের উৎসস্থল পর্যটনের জন্য বিখ্যাত দানি শহরের কাছে, মাটির ১০ কিলোমিটার (প্রায় ৬ মাইল) ভেতরে। রিখটার স্কেলে প্রথমে কম্পনের মাত্রা দেখিয়েছিল ৬.০। পরে সেটি আরও বাড়ে। ৬.১ হয়ে দাঁড়ায়।
দাউদের অসুস্থতার খবর আসার পরেই পাকিস্তান জুড়ে তৎপরতা। লাহৌর, করাচি, ইসলামাবাদের মতো শহরে কড়া সতর্কতা। পাকিস্তানের বিভিন্ন শহরে সার্ভার ডাউন, কাজ করছে না এক্স, ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম।
এর আগে পাকিস্তানেই আছে দাউদ, একথা স্বীকার করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই দাউদ ইব্রাহিম সম্পর্কে ভোলবদল করেছিল পাকিস্তান। ইসলামাবাদের দাবি ছিল, দাউদ ইব্রাহিম পাকিস্তানে আছে বলে যে দাবি করা হচ্ছে, তা ভিত্তিহীন। অথচ সেই সময় ইমরান সরকার জঙ্গিদের নামের তালিকা প্রকাশ করে। তাতে নাম ছিল দাউদের।
করাচিতে দাউদের দু’টি বাড়ির ঠিকানাও উল্লেখ করা হয়েছিল। জঙ্গিদের অর্থ সাহায্যে রাশ টানতে পদক্ষেপ না করায় পাকিস্তানকে ধূসর তালিকাভূক্ত করে আন্তর্জাতিক সংস্থা ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স। এই অপবাদ ঘোচাতে ৮৮টি জঙ্গি সংগঠন ও তাদের মাথাদের নামের তালিকা প্রকাশ করে পাকিস্তান। তাতেই নাম ছিল দাউদের।
এদিকে, দাউদ ইব্রাহিমের সন্ধান দিতে পারলে মিলবে ২৫ লাখ টাকা। ডনের নাগাল পেতে আর্থিক পুরস্কার ঘোষণা করেছিল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা বা NIA। সেই সঙ্গে দাউদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী শাহিল শেখ বা ছোটা শাকিলের মাথার দাম ২০ লক্ষ টাকা ঘোষণা করেছিল তারা।
সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, গত ১৮ অগাস্ট NIA’র তরফে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। তাতে বলা হয়, দাউদের ডি-কোম্পানি আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী নেটওয়ার্ক, যা টেরর ফান্ডিংয়ের জন্য লস্কর-ই-তইবা, জইশ-ই-মহম্মদ এবং আলকায়দার মতো আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনগুলির সঙ্গে যোগাযোগ রেখে কাজ করে। দাউদ ও ছোটা শাকিলের পাশাপাশি ডি-কোম্পানির আরও ৩ সদস্যের নামে ১৫ লাখ টাকা করে আর্থিক পুরস্কার ঘোষণা করেছে NIA।