নয়াদিল্লি: তিনি বলিউডের শাহেনশাহ্ (Shahenshah)। তিনি সকলের প্রিয় বিগ বি (Big B)। আশি পেরিয়ে ১১ অক্টোবর ৮১তম জন্মদিন পালন করলেন বলিউড তারকা অমিতাভ বচ্চন (Amitabh Bachchan)। দশকের পর দশক ধরে যিনি নিজের শিল্পের মাধ্যমে মন জয় করেছেন অগুন্তি মানুষের। কিন্তু সাফল্যের এই স্থানে পৌঁছনোর রাস্তা বেশ মসৃণ ছিল না তাঁর। অমিতাভ বচ্চনের প্রথম ছবি ‘সাত হিন্দুস্তানি’ (Saat Hindustani) সেভাবে সাফল্য লাভ করতে পারেনি বক্স অফিসে। এরপর একাধিক ছবিতে তাঁকে সাপোর্টিং রোলে অভিনয় করতে দেখা গেছে। তবে ১৯৭৩ সালের ‘জঞ্জির’ তাঁকে সাফল্য এনে দেয়, এরপর ‘দিওয়ার’, ‘শোলে’, ‘মুকদ্দর কা সিকন্দর’, ‘ডন’, ‘অমর আকবর অ্যান্থনি’, আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি বিগ বি। তবে জানেন কি, অমিতাভ বচ্চনের এমন বেশ কিছু কাল্ট চরিত্র আছে, যেগুলির জন্য নাকি প্রথম পছন্দ তিনি ছিলেনই না। অন্যান্য অভিনেতারা সেই চরিত্র বাতিল করায়, সেগুলির অফার পান শাহেনশাহ, এবং তা ব্লকবাস্টার হয়ে ওঠে। রইল কিছু উদাহরণ।
‘জঞ্জির’ (Zanjeer)
১৯৭৩ সালে, তখন অমিতাভ বচ্চনের কেরিয়ারে একগুচ্ছ ফ্লপ। এক কথায় বলা চলে, বেশ খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে তখন অভিনেতার কর্মজীবন। সেই সময় সেলিম খান, জাভেদ আখতার এবং প্রাথমিকভাবে অনিচ্ছুক পরিচালক প্রকাশ মেহরা, সিদ্ধান্ত নেন যে ‘অ্যাংরি ইয়ং ম্যান’ ঘরানা তৈরি করার। এই ছবির হাত ধরে অমিতাভের কেরিয়ার নতুন মোড় নিলেও তিনি এই ছবির মুখ্য চরিত্রের জন্য প্রথম পছন্দ ছিলেন না। এক সাক্ষাৎকারে জাভেদ আখতার বলেছিলেন অমিতাভ বচ্চন ছিলেন তাঁদের শেষ পছন্দ। চিত্রনাট্য লেখা হয়েছিল ধর্মেন্দ্রর কথা মাথায় রেখে। কিন্তু কোনও কারণে তিনি এই ছবির প্রস্তাব বাতিল করে দেন। এটি প্রকাশ মেহরার প্রযোজনায় প্রথম ছবি ছিল। এরপর তিনি চিত্রনাট্য নিয়ে একাধিক অভিনেতার কাছে যান কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। মূলত ‘জঞ্জির’ ছবিতে কোনও রোম্যান্টিক বা কমেডি অ্যাঙ্গেল না থাকার কারণেই এই ছবি বাতিল করে দেন সকলে, কারণ সেই সময় রাজেশ খান্নাকে ‘ঈশ্বর’ বলে ধরা হত। তবে প্রকাশ মেহরার কাছে বারবার অমিতাভ বচ্চনের নাম সুপারিশ করতে থাকেন জাভেদ আখতারই। কিন্তু তখন অমিতাভ বচ্চনের বাজার খুবই খারাপ। শেষ পর্যন্ত অমিতাভ বচ্চনকে নিয়েই তৈরি হয় ছবিটি এবং ব্লকবাস্টার হিট হয়।
‘দিওয়ার’ (Deewar)
১৯৭৫ সালে যশ চোপড়ার পরিচালিত ‘দিওয়ার’ ছবির জন্য প্রথম পছন্দ ছিলেন শত্রুঘ্ন সিন্হা। এক সাক্ষাৎকারে শত্রুঘ্ন সিন্হা নিজেই সেই কথা জানিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমি হয়তো আড়াইশো মতো ছবি করেছি। এমন একাধিক ছবি আছে যেগুলো হাতছাড়া করার জন্য আফশোস করেছি। যেমন ‘দিওয়ার’। ওটা আমার জন্য লেখা হয়েছিল। আমার কাছে প্রস্তাব এনেছিলেন। আমার কাছে মাস ছয়েক মতো চিত্রনাট্যটা ছিল। কিন্তু কিছু মানুষের সঙ্গে মতোভেদ হওয়ায় আমি স্ক্রিপ্ট ফিরিয়ে দিই।’ অমিতাভ বচ্চন এই ছবিতে কাজ করে বিপুল ভালবাসা ও প্রশংসা পান।
‘শোলে’ (Sholay)
ভারতীয় সিনেমার কাল্ট ছবি ‘শোলে’। অমিতাভ বচ্চনের ‘জয়’ ও ধর্মেন্দ্রর ‘বীরু’ দর্শকের মনে আলাদা স্থান করে নেয়। রমেশ সিপ্পি পরিচালিত এই ছবি এভারগ্রিন। যদিও জয়ের চরিত্রের জন্য নির্মাতাদের প্রথম পছন্দ অমিতাভ বচ্চন ছিলেন না। তাঁরা চেয়েছিলেন শত্রুঘ্ন সিন্হা এই চরিত্রে অভিনয় করুন। সূত্র মারফৎ তখন জানা যায় যে শত্রুঘ্ন সিন্হা দুজন নায়ক সম্বলিত ছবিতে অভিনয় করতে চাননি। যদিও তিনি পরে জানিয়েছিলেন যে ‘টেকনিক্যাল সমস্যা’র জন্য কাজটা করতে পারেননি। কারণ যাই হোক, এরপর জয়ের চরিত্রে অমিতাভ বচ্চন ঝড় তুলেছিলেন।
আরও পড়ুন: Amir Khan on Ira: আগামী বছর মেয়ের বিয়ে, ‘খুব কান্নাকাটি করব’, অকপট আমির খান
‘ডন’ (Don)
‘জঞ্জির’, ‘শোলে’ বা ‘দিওয়ার’ তো বটেই, এমনকী ‘ডন’-এর জন্যও প্রথম প্রস্তাব অমিতাভ বচ্চনের কাছে যায়নি। ১৯৭৮ সালের দর্শক ‘ডন’-এর মতো ছবি তার আগে কখনও দেখেননি এবং এই ছবি দর্শকের দৃষ্টিভঙ্গী বদলে দিয়েছিল। এক সাক্ষাৎকারে ছবির পরিচালক চন্দ্র বারোট জানিয়েছিলেন ডনের চরিত্রের জন্য তাঁরা প্রথমে ধর্মেন্দ্র, জীতেন্দ্র ও দেব আনন্দের কাছে গিয়েছিলেন। তারপর তাঁরা যান অমিতাভের কাছে এবং বাকিটা ইতিহাস।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামেও। যুক্ত হোন
https://t.me/abpanandaofficial
Read More